ঢাকা , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ, তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

ভয়েস প্রতিদিন ডেস্ক
আপলোড সময় : ২৪-১০-২০২৪ ০১:১০:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২৪-১০-২০২৪ ০১:১৬:১৯ অপরাহ্ন
শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ, তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজিব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজির এ আদেশ দেন।

 
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিটের বিষয়ে আজ হাইকোর্টের আদেশের দিন ধার্য ছিল।
 
বুধবার (২৩অক্টোবর) পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ আদেশের জন্য এদিন ঠিক করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মামলাটি আদেশের জন্য কার্যতালিকায় ছিল।
 
১০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ বাতিলসহ রাজউকের সব অবৈধ বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দীন এ রিট করেন।
 
অন্য আইনজীবীরা হলেন- রেজাউল ইসলাম, আল রেজা মো. আমির, গোলাম কিবরিয়া, মোহাম্মদ হারুন, বেলায়েত হোসেন সোজা, কামরুল ইসলাম রিগান, হাসান মাহমুদ খান, শাহীনুর রহমান শাহীন এবং জিল্লুর রহমান।
 
রিটে অবৈধ বরাদ্দের সঙ্গে জড়িত এবং সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানানো হয়। এছাড়া এসব বরাদ্দের বিষয়ে তদন্তের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতিকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
 
রিটে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, পূর্বাচল প্রকল্প পরিচালক, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে বিবাদী করা হয়।বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দীন জানান, নিজেকে অসহায় এবং নিঃস্ব বলে সভা-সমাবেশে রাজনৈতিক বক্তব্য দিলেও শেখ হাসিনা স্বয়ং নিজের নামে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন। পূর্বাচলে প্রস্তাবিত কূটনৈতিক জোন ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডে তার প্লট নম্বর ০০৯। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট তার নামে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। শেখ হাসিনার বাসভবন ধানমন্ডির ৫৪ সুধা সদনের ঠিকানায় বরাদ্দপত্র পাঠানো হয়।
 
রাজউক সূত্রে জানা যায়- রেকর্ডরুমে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের ফাইলগুলো বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখা হয়েছে। হাসিনার প্লট বরাদ্দের ফাইলের ওপর বড় ইংরেজি হরফে লেখা রয়েছে ভি-৩, পাতা ১৪১। ফাইলে তার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্রের কপি, বরাদ্দপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপিসহ অন্য কাগজপত্রও রয়েছে।
 
 
রাজউকের উপপরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) নায়েব আলী শরীফের সই করা চূড়ান্ত বরাদ্দপত্রে লেখা হয়- ‘কাঠাপ্রতি ৩ লাখ টাকা হিসাবে ১০ কাঠার প্লটের মোট মূল্য ৩০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো।’ শেখ হাসিনা ছাড়াও ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তাদের প্লট নম্বর যথাক্রমে ০১৫ এবং ০১৭। এর মধ্যে জয়ের নামে প্লটের বরাদ্দপত্র জারি করা হয় ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর। পরে ওই বছরের ১০ নভেম্বর প্লটের মালিকানা সংক্রান্ত রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। এর আগে ২ নভেম্বর পুতুলের নামেও ১০ কাঠা প্লটের বরাদ্দপত্র ইস্যু করা হয়। এতে এস্টেট ও ভূমি-৩ শাখার তৎকালীন উপপরিচালক হাবিবুর রহমানের সই রয়েছে।
 
শুধু শেখ হাসিনা ও তার ছেলেমেয়ে নন; পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা করে প্লট নেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও তার ছেলেমেয়েও। তাদের নামেও যথারীতি রাজউকের আইন ও বিধি অমান্য করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে শুধু এই ৬টি প্লট নয়, এরকম অন্যান্য প্লটের বরাদ্দ চ্যালেঞ্জ করে এ রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। প্লট বরাদ্দ করা হয় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের একই জায়গায়। সেখানে শেখ রেহানার প্লট নম্বর ০১৩, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির প্লট নম্বর ০১১ ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর প্লট নম্বর ০১৯।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Voice Protidin Desk

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ